আসসামু অলাইকুম, আপনার ফেসবুক গ্রুপ আপনি কিভাবে ব্যবহার করেন? শুধুমাত্রই কি বিনোদন পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হিসেবে?
কিন্তু আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে আপনি কিন্তু খুব ভালো আয় করতে পারেন?
এখন আপনার মনের মধ্যে হয়তো একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে আর সেটা হলো, কিভাবে আপনি ফেসবুক গ্রুপ থেকে আয় করবেন?
তবে একটা কথা স্পষ্ট করে বলা যাক ফেসবুক গ্রুপ থেকে আপনি যেমন তেমনভাবে আর করতে পারবেন না, এক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে আপনার ফেসবুক গ্রুপ কে আয় করার উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।
আর এক্ষেত্রে প্রধান শর্তের মধ্যে একটি হল আপনার গ্রুপের মেম্বারস, এবং অপরটি হলো আপনার গ্রুপ কতটা অ্যাক্টিভ।
যখনই আপনি আয় করতে চাইবেন তখন এই গ্রুপ থেকে আপনি কতটুকু সাড়া পাবেন তা সিংহভাগ নির্ভর করবে আপনার গ্রুপের মেম্বারদের উপর।
আর আপনার গ্রুপের মেম্বাররা কিভাবে এতে ভূমিকা রাখবে, এটা নিয়ে একটু পরে আলোচনা করা যাবে। তবে জেনে রাখেন গ্রুপের মেম্বার যত বেশি হবে ততবেশি আপনি আয় করতে পারবেন।
আর আরেকটা হল আপনার গ্রুপ কতটা একটিভ এই সম্পর্কে? ফেসবুক গ্রুপ একটিভ বলতে সাধারণত এটা বুঝায় যে আপনার গ্রুপে প্রতিদিন কতটি পোস্ট হয়।
এক্ষেত্রে যে কেউ চাইলেই কিন্তু একাই নিজে প্রতিদিন 10 টা থেকে 15 টা পোস্ট করতে পারে, আপনার গ্রুপে যদি প্রত্যহ 20-25 টা পোস্ট হয়ে যায় তাহলে আর কিছুরই দরকার নেই।
এক্ষেত্রে আপনার গ্রুপটি কতটা অ্যাক্টিভ এই মর্মে আরেকটি বিষয় বোঝানো হয়েছে আর সেটি হল, আপনার ফেসবুক গ্রুপে প্রত্যেকটি পোস্টে মেম্বার এরা কি রকম সাড়া দেয়।
এই গ্রুপে পাবলিশ করা প্রত্যেকটি স্ট্যাটাসে লাইক কমেন্ট কিংবা রিএকশন কত গুণ বেশি সেটা দ্বারাই অনুমান করা যাবে আপনার ফেসবুক গ্রুপ কতটা অ্যাক্টিভ।
আর যখনই আপনার ফেসবুক গ্রুপ উপরে দেয়া দুইটি শর্ত মেনে চলবে তখনই আপনার ফেসবুক গ্রুপ আয় করার জন্য পুরোপুরি উপযুক্ত হয়ে উঠবে।
এবার এই টপিক নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক কিভাবে আপনার ফেসবুক গ্রুপ থেকে আপনি আয় করবেন?
আপনি চাইলে আপনার ফেসবুক গ্রুপ থেকে বিভিন্ন উপায়ে আয় করতে সক্ষম হবেন। তবে এই পোস্টটিতে আমি আয় করার কয়েকটি কার্যকরী উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব।
- আরো পড়ুনঃ ফেসবুকে 3D photo পোস্ট করুন খুব সহজেই।
১. অন্যান্য ফেসবুক গ্রুপ বা পেজ প্রমোশনঃ
সহজ কথায় মেম্বার বিক্রি করা। যেমন অনেকে নতুন গ্রুপ বা পেজ খুললে তারা টাকার বিনিময়ে তাদের গ্রুপ বা পেজ প্রমোশন করাতে চায়। যেখানে তার পেজের লিংক বা গ্রুপের লিংক আপনার গ্রুপে সেয়ার করতে বলা হতে পারে।
২. বিভিন্ন ওয়েবসাইট প্রমোশন বা নিজের ওয়েবসাইট সেয়ার করেঃ
এক্ষেত্রে খুব বেশি সংখ্যক মেম্বারকে সমন্বয় যদি আপনার একটি ফেসবুক গ্রুপ থাকে তাহলে আয় করার কাজটি আরও বেশি সহজতর হয়ে উঠে।
কারণ শুধুমাত্র একটি ওয়েবসাইট খোলার মাধ্যমে কিন্তু আপনি আয় করতে পারবেন না, আয় করার জন্য অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ইউনিক ভিজিটর প্রয়োজন হবে প্রয়োজন হবে।
এক্ষেত্রে আপনি যদি সম্পূর্ণ একটি নতুন ওয়েবসাইট খুলেন এবং এটি আপনার গ্রুপের মাধ্যমে আপনার পোস্টগুলো শেয়ার করেন,তাহলে এখান থেকে আয় করা আপনার কাছে আরো বেশি সহজতর হয়ে উঠবে।
আপনার গ্রুপে মেম্বার বেশি হলে এবং এক্টিভিটি বেশি থাকলে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের প্রমোশন করিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারেন। এটা হচ্ছে যাদের ওয়েবসাইট তারা আপনার গ্রুপে নিয়মিত পোস্ট গুলোর লিংক আপনার গ্রুপে সেয়ার করবে এর বিনিময়ে আপনাকে প্রতি মাসে পেমেন্ট করবে।আপনি হয়তো এটা জানেন যে আপনি যদি ফ্রিতে একটি ব্লগ কিংবা ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট খুলে থাকেন তাহলে এখানে প্রতিনিয়ত নতুন আর্টিকেল লিখার মাধ্যমে আপনি আয় করতে পারেন।
৩.প্রডাক্ট বাই & সেলঃ
প্রোডাক্ট ব্রান্ডিং বলতে সাধারণত কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট সম্পর্কে পজিটিভ স্ট্যাটাস দেওয়া বুঝায় যেমন- আপনার একটি জনপ্রিয় পেজ বা গ্রুপ আছে। আপনি এই পেজ কিংবা গ্রুপে কোন এক কোম্পানির একটি বা দুটি প্রোডাক্ট সম্পর্কে অর্থের বিনিময়ে রিভিউ দিলেন।
আপনার এই রিভিউটির ফলে প্রোডাক্টের চাহিদা বেড়ে যেতে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে; কে দিবে এরকম ব্রান্ডিং করার অফার? এক্ষেত্রে প্রথমদিকে দুয়েকটি কোম্পানির মার্কেটিং ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। আপনার যদি পপুলারিটি থাকে তবে নিঃসন্দেহে তারা আপনাকে ফেরাবে না তবে প্রথমদিকে টাকার পরিমাণ কম অফার করতে পারে। আপনার পেজের পপুলারিটির উপর সফলতা নির্ভর করবে প্রোডাক্ট ব্রান্ডিং এর ক্ষেত্রে।
৪.এফিলিয়েট মার্কেটিংঃ
এটি হচ্ছে সাধারণত অনলাইন বিক্রয়কর্মীর মতো৷ যেকোন প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট বিক্রি করে তার কমিশন নেওয়া হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করা।
আপনার কোন ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ থাকলে সেখানে প্রোডাক্ট সেল দিতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রোডাক্ট সেলের উপর আপনার আয় নির্ভর করবে। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য ভালো ভালো কোম্পানি রয়েছে যেমন আমাজন, ইবাই অথবা আলিবাবা। আপনি চাইলে এসব কোম্পানির প্রোডাক্ট আপনার পেজ বা গ্রুপে সেল দিতে পারেন।
৫.ইউটিউব ভিডিও সেয়ারিংঃ
আপনি যদি ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলে থাকেন এবং এখানে যদি আপনি ইন্টারেস্টিং এবং ইউনিক ভিডিও পাবলিশ করে তার গ্রুপে প্রচার করেন, তাহলে এর সুফল আপনি দেখতে পারবেন।
আর আপনি যদি আপনার ফেসবুক গ্রুপের ভালো মানের ভিডিও গুলো প্রতিনিয়ত ও শেয়ার করে থাকেন তাহলে এটি আপনার ফেসবুক গ্রুপের সৌন্দর্য কোনমতেই নষ্ট করবে না।
আর ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে আপনার ইউটিউবে পাবলিশ করার বিষয়টিকে খুব সহজেই ভাইরাল করে দিতে পারবেন, তাছাড়াও আপনার ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে পারবেন।
৬.লিংক শর্ট করেঃ
ইন্টারনেটের জগতে আপনি এরকম অনেক ওয়েব সাইটের সন্ধান পাবেন যে সাইটগুলো থেকে আপনার প্রয়োজনীয় লিংক ছোট করে এটা অন্যদের মাঝে শেয়ার করার মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
তবে লিংক ছোট করার ক্ষেত্রে আপনার লিংকটি কিন্তু পূর্বের মতোই কাজ করবে, এক্ষেত্রে এই লিংকের মাধ্যমে যে কেউ যেকোনো কাজ সম্পাদন করলে এগুলো আপনার একাউন্টে ডলার হিসেবে যুক্ত হবে।
কারণ আপনি যখনই এরকম লিংক শর্ট ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে চাইবেন তখনি এখানে আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করে একটি একাউন্ট খুলতে হবে, তবে এটা আপনি একদম ফ্রিতে পারবেন।
আর উপরের উল্লেখিত উপায়ই শুধুমাত্র নয় আপনি চাইলে আরো বিভিন্ন উপায়ে ফেসবুক গ্রুপ থেকে খুব ভালো মানের আয় করতে পারবেন।