কিভাবে ফেসবুক পেজ বা আইডিকে ব্লু ভেরিফাইড করতে হয়? ব্লু ব্যাজ পাওয়ার কিছু সিক্রেয় টিপস।
ফেসবুকে ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট ভ্যারিফিকেশনের (Blue verified base) ব্যবস্থা চালু আছে। যেখানে অ্যাকাউন্টের নামের পাশে নীল রঙের একটি টিক চিহ্ন থাকে। ফেসবুকে নীল বৃত্তাকারে সাদা এ টিক চিহ্নকে বলা হয় ব্লু-ব্যাজ।আপনি কি জানেন কিভাবে ফেসবুক পেজ বা আইডিতে ব্লু ব্যাজ পাওয়া যায়? ব্লু ব্যাজ পাওয়া সিক্রেয় টিপস?
নোটঃ ভাই এতদিন অনলাইনে ফেসবুক ব্লু ভেরিফাইড নিয়ে যে গতানুগতিক লেখা পড়ে আসছেন ওইটা ভুলে যান,এগুলা শন্তনা দেওয়া ছাড়া কিছুই না।
ফেসবুকের নিয়ম অনুযায়ী যে কেউ চাইলেই তার প্রোফাইল বা পেজ ‘ভেরিফাইড’ করতে পারে। আজকের টিপসে রয়েছে যেভাবে ফেসবুক পেজ বা অ্যাকাউন্ট ব্লু-ব্যাজ করবেন এবং এর কিছু গোপন তথ্য।
আপনারা জানেন যে শুধু বৈধ অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেই ব্লু-টিক দেয়া হয়। সে ক্ষেত্রে প্রথমে ইচ্ছুক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ডকে এ ব্লু-ব্যাজের জন্য ফেসবুকের কাছে আবেদন করতে হয়। আবেদন পাওয়ার পর ফেসবুক কর্তৃপক্ষ অ্যাকাউন্টটিকে ভালো করে পরীক্ষা করে দেখেন এবং যদি সে ব্যাক্তি ব্লু ব্যাজের উপযুক্ত হয় কেবল তখনি তাকে ব্ল বেজ দেওয়া হয়।
এখন কথা হচ্ছে আপনার আমার মত সাধারণ পাবলিকের কপালে কি আর এউ ব্লু ব্যাজ আছে? হ্যাঁ অবশ্যই যদি আপনি নিচের নিয়মগুলো মানতে পারেন তাহলে ৭০-৮০% ব্লু ব্যাজ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে তাই লেখাগুলো মনযোগ সহকারে পড়ার চেস্টা করুন।
ফেসবুকে ব্লু ভেরিফাইড হতে কত লাইক থাকা লাগবে?
আসলে ভেরিফাইড এর সাথে লাইকের কোন সম্পর্ক নেই এটা সম্পূর্ণ আপনার পপুলারিটির উপর নির্ভর করে।
আপনি ফেমাস হয়ে থাকলে ৫০ লাইকেও ভেরিফাইড হতে পারেন আবার সাধারণ পাবলিক লক্ষ লক্ষ লাইক নিয়েও ভেরিফাইড হতে পারবেন না।
Facebook verify তে follower/like doesn’t matter.
ফেসবুকে ব্লু ভেরিফাই করতে কি কি থাকা লাগবে?
ফেসবুকে ব্লু ভেরিফাই হতে নিচের ২ টি জিনিস থাকা প্রয়োজন -
- পেজে ব্লু টিক পেতে হলে পেজ ক্যাটাগরি Music Artist এবং পেজ কোয়ালিটি গ্রিণ এবং ভায়োলেন্স মুক্ত হতে হবে।
- ব্যক্তির নিজস্ব নামে পেজ এবং NID/smart card/passport /driving licence থাকতে হবে।
মুলত ব্লু ভেরিফাই হওয়ার জন্য ৩টি জিনিসকে প্রধান্য দেওয়া হয়ে থাকেঃ
১।গুগল নলেজ প্যানেল থাকা অবশ্যক।
গুগল নলেজ প্যানেল হলো ইনফরমেশন বক্স। আপনি যখন কোন ফেমাস ব্যাক্তির নাম লিখে গুগলে সার্চ করেন তখন সবার প্রথমে একটি ছোট বক্সে সেই ব্যাক্তির সম্পর্কে অনেক ডিটেইলস দেওয়া থাকে এটিই হলো গুগল নলেজ প্যানেল।
এটা অটোমেটিক তৈরি হয় গুগলে,যখন মানুষ আপনাকে নিয়ে সার্চ করে,বা অন্য কোনো প্লার্টফমে আপনি জনপ্রিয়,তখন নলেজ প্যানেল সরাসরি হয়ে যায়।
চিত্রে দেখুন Sakib Al Hasan লিখে গুগলে Search করার পর সাকিবের নলেজ প্যানেল চলে এসেছে।
২।নিজস্ব ওয়েব সাইট থাকা চাই আপনার নামে।
এখন আবার বইলেন না সাকিব আল হাসানের ওয়েবসাইট কই? ভাই তাদের নিজের ওয়েবসাইটের দরকার নাই, পাবলিক এমনিতেই তাদের নামে বহুত লেখালেখি করে।
কিন্তু আপনি তো আর তাদের মত পপুলার না তাই আপনার জন্য নিজস্ব ওয়েবসাইট হলে একধাপ এগিয়ে থাকবেন।
৩।আপনার নামে নিউজ করা চাই বিভিন্ন টপ রেকিং ওয়েবসাইটে ইংরেজিতে।
উপরের পদ্ধতিগুলো ব্যাবহার করে Music / Artist ক্যাটাগরির প্রফাইল বা পেজ ফেরিভাই করতে পারবেন।
কিছু লোকের প্রশ্ন আসতে পারে শুধু Music /Artist কেন অন্য কোন ক্যাটাগরিতে হবেনা?
তাদের জন্য উত্তরঃ ভাই আপনি টাকা দিয়ে নিউজ করিয়ে ( হিরো আলমের মত) অনলাইনে গায়ক নামে পরিচয় পেতে পারবেন কিন্তু পাড়ার মাঠে ক্রিকেট খেলে সাকিব আল হাসান হইতে পারবেন না।
আশা করি কি বুঝাতে চাচ্ছি বুঝতে পারছেন,তারপরেও যদি পারেন নিজে ট্রায় করুন,সফল হলে যানিয়েন।
যাইহোক মূল কথায় আশি, আপনাকে যেকোনো উপায়ে অনলাইনে সেলেব্রিটি হতে হবে।
Music artist হিসেবে আইডি বা পেজ ভেরিফাইড করতে কি কি লাগবে?
১. নিজের গাওয়া গান /তৈরিকৃত মিউজিকঃ
যেটা চুরি করা বা অন্য কোথাও থেকে সংগ্রহ করা না৷ আপনি চাইলে মিউজিক কিনতে পারবেন(যেটাকে লাইসেন্স করা বলা হয়),কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে মিউজিক কিনে নিলে যেখানে ঐ কোম্পানি কপিরাইট দেয় না,কারণ আপনি ওনাদের পে করেছেন এবং লাইসেন্স পাইছেন।
এরকম ৫/৬ টা মিউজিক কিনতে বাংলা টাকায় ১৬০০/১৭০০ যাবে। একেক কোম্পানি একেক রকম নেয়,কম আপনাকে খুজতে হবে৷ আর আপনি মিউজিক বানাতে পারলে তো কথাই নাই।
যদি বলেন কোন ধরনের মিউজিক?
আর্টিকেলের নিচের আমি কিছু ভেরিফাইড প্রফাইল লিংক দিয়ে দিব তাদের নামে গুগলে search করলেই মিউজিক পেয়ে যাবেন।
যেখান থেকে ধারণা নিয়ে নিবেন আসলে কোন ধরনের মিউজিক লাগবে।
২.মিউজিক ডিস্ট্রিবিউটরঃ
এরা হলো এমন মাধ্যম যারা আপনার মিউজিককে বিভিন্ন প্লার্টফর্মে ছড়িয়ে দেয় বা আপলোড হতে সাহায্য করে। ইউটিউবে যেমন আপনি সরাসরি গান/ ভিডিও আপলোড করতে পারেন। কিন্তু বিভিন্ন মিউজিক প্লাটফর্মে গান আপলোড এর জন্য আপনাকে ডিস্ট্রিবিউটরের সহায়তা নিতে হবে।
এরা স্পটিফাই, এপেল মিউজিক, ডেজার সহ নানা প্লাটফর্মে গাণ ছড়িয়ে দিবে৷ ডিস্টিবিউটর খরচ 20$ /22$ (একেক ডিস্ট্রিবিউটর একেক চার্জ নেয়)
চাইলে Distrokid এর মাধ্যমে আপনার মিউজিক পাবলিশ করতে পারেন।
DistroKid is the easiest way for musicians to get music into Spotify, Apple, Amazon, Tidal, TikTok, YouTube, and more.
Distrokid ছাড়াও অনেক মিউজিক পাবলিসার রয়েছে অনলাইনে খুজলেই পেয়ে যাবেন।
৩.স্পটিফাই আর্টিস্ট ভেরিফাইঃ
এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়,এটা পেলে বাকি গুলোও এটার রেফারেন্সে ভেরিফাই করা যায়, যেমনঃ apple music,amazon,youtube artist channel ইত্যাদি।
৪.অনলাইন নিউজ পোর্টালে আপনার নামে নিউজ থাকতে হবেঃ
কয়েকটা পত্রিকাকায় নিউজ আপনার সম্পর্কে আর্টিকেল পাবলিশ করাতে হবে,এগুলোতে ও প্রতি নিউজে ভালোই খরচ পড়বে।
যেমন আপনি বাংলাদেশের একজন সফল মিউজিক আর্টিস্ট,উদ্দোক্তা সাথে অন্য কিছু যদি থাকে।
৫.গুগল নলেজ প্যানেল থাকতে হবেঃ
উপরের কাজগুলো করতে পারলে নলেজ প্যানেল অটোমেটিক ক্রিয়েট হয়ে যাবে সেটা ক্লেইম করতে হয়।
এই গ্রুপে অনেক লোক আছা যারা প্রফেশনাল নলেজ প্যানেল এর নিয়ে অভিজ্ঞ, তাদের সহায়তা নিতে পারেন।
৬. আপনার নিজস্ব ওয়েবসাইটেঃ
আপনার সম্পকে আর্টিকেল/বায়োগ্রাফি থাকতে হবে
যেমন আপনি বাংলাদেশের একজন সফল মিউজিক আর্টিস্ট,উদ্দোক্তা, ইত্যাদি।
কিভাবে ওয়েবসাইট বানাবেন তা এখানে দেখুন।
এগুলো ছাড়াও আরো ভালো হয় আপনি উইকিতে,imdb তে বায়োগ্রাফি লিখাতে পারেন, YouTube এ Musical / Artist চ্যানেল থাকে।
উপরের কাজগুলো সফল ভাবে করতে পারলেই আপনি ভেরিফাইড হতে পারবেন বাকিটা জুকার মামার ইচ্ছা।
এখন সব কাজ করার পর আপনাকে ফেসবুক ভেরিফিকেশ এর জন্য আবেদন করতে হবে।
কিভাবে ফেসবুক ভেরিফিকেশন এর জন্য আবেদন করবেন?
ব্লু-ব্যাজের জন্য আবেদন করতে শুরুতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।
- https://www.facebook.com/help/contact/342509036134712
- এরপর পেজ বা প্রোফাইল নির্বাচন করুন।
পেজ হলে উপরের মত পেজ সিলেক্ট করুন।
প্রোফাইল হলে নির্ধারিত বক্সে প্রোফাইল লিংক দিন।
- ডকুমেন্টস জমা দিন-
অফিশিয়াল আইডি (যেমন: জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, ফোন বা ইউটিলিটি বিল ইত্যাদি) এর স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে।
- Category & Country সিলেক্ট করুন।
- Additional Information বক্সে আইডিটি যে কারণে ভেরিফাই হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন ব্যবহারকারী-সেটি দিতে হবে।
- আপনার পেজ বা প্রোফাইল যে ব্যক্তির বা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করে সেই সমস্ত নাম তালিকাভুক্ত করুন। অন্যান্য ভাষায় বিভিন্ন নাম এবং একই নাম অন্তর্ভুক্ত করুন।
- এখানে আপনার অনান্য আইডি সমূহর লিংক মেনশন করুন। যেমনঃ YouTube Artist channel, Spotify, Apple Music, IMDb,Amazon music ইত্যাদি মেনশন করুন।
- এবার Send বাটনে ক্লিক করে সাবমিট করলেই আবেদনটি ফেসবুকের কাছে পৌঁছে যাবে।
এরপর ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে প্রোফাইলটিতে ব্লু-ব্যাজ প্রদান করবে।
তবে খেয়াল রাখবেন আপনার নোটিফিকেশনে। ফেইসবুক আপনাকে এই বিষয়ে কখনো কিছু জানাতে বা চাইতে পারে।
ভেরিফাই হয়ে গেলেও আপনি আপনার নোটিফিকেশনে তার খবর তো পাবেনই,সেই সাথে আপনার ফেইসবুকের নামের পাশে ঠিক চিহ্ন টি দেখতে পারবেন।
কিছু ভেরিফাইড ব্যাক্তিঃ
Facebook page: Aman Ullah
Telegram
YouTube : Aman Ullah
IMDb: Aman Ullah
Drezer: Aman Ullah
Spotify : Aman Ullah
Knowledge panel : Aman Ullah
আরো কিছু দেখার থাকলে নলেজ প্যানেল এর সাথে বহুত তথ্য আছে দেখে নিন।
যাদেত মিউজিক নিয়া প্রশ্ন আছে তারা Aman Ullah Chat এর টেলিগ্রাম গ্রুপে জয়েন হতে পারেন।
বাকি গুলার ফেসবুক মেনশন দিয়ে দিচ্ছি অনান্য তথ্য লাগলে গুগলে খুজুন পেয়ে যাবেন।
Facebook : সাইন্ঠুস- ScienThush
Facebook page: Limon Ahmed
Facebook page: Md Nazmus Shakib
ভাই অনেক প্রমান দিছি আর লাগলে খুইজা লন,বহুত পাইবেন।
সব শেষে নিচের পোস্ট টি পড়ুনঃ
বুঝতেই তো পারছেন সব কিছুতেই কপাল লাগে,এত কষ্ট করেও যখন না পারবেন আমাকে আবার গালি দিয়েন না,তবে লেগে থাকেন হয়ে যাবে।
এখন যার ব্লু ব্যাজ নেওয়ার খুব ইচ্ছা উপরে দেওয়া পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে থাকুন।
আরো পড়ুনঃ
- এসইও কি?এসইও কত প্রকার ও কি কি? কিভাবে এসইও করতে হয়?
- নেটওয়ার্কের বাইরে মুভি ডাওনলোড।। নেটওয়ার্কের বাইরে মুভি কাদের নিয়ে তৈরি?